মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

এক টাকাতেই পেট পুরে খাবার!

দুর্মূল্যের বাজারে এখন হয়তো ভিক্ষুককেও এক টাকা কেউ ভিক্ষা দেন না। কিন্তু এই এক টাকাতেই পাওয়া যাচ্ছে পেট পুরে খাবার।
অসম্ভব শোনালেও এমনটাই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ভারতের মধ্যপ্রদেশের এক মেস মালিক ভেঙ্কট রামন। এই দামে খাবার দেয়া হয় মেসের পাশের হাসপাতালে আগত দরিদ্র রোগীদের।
গত আট বছর ধরে সেখানকার সরকারি হেডকোয়ার্টার হাসপাতালে রোগীর পরিজনদের দিনে ও রাতে এই দামে খাবার দিয়ে আসছেন তিনি।
ভেঙ্কট রামনের এ উদ্যোগ নেয়ার পেছনেও আছে একটি ঘটনা। ২০০৭ সালে এক বৃদ্ধা তার অসুস্থ স্বামীর জন্য ভেঙ্কট রামনের দোকানে খাবার কিনতে আসেন। তিনি এতটাই দরিদ্র, যে দু’জনের খাবার কেনার মত সঙ্গতিও ছিল না তার। ওই বৃদ্ধা ১০ টাকার খাবার চান, যেন স্বামীর সঙ্গে ভাগাভাগি করে খেতে পারেন। বৃদ্ধার এ অবস্থা ভেঙ্কট রামনের মনে দাগ কাটে। তিনি ওই দামেই বৃদ্ধাকে দু’জনের খাবার দেন।
ভেঙ্কটরামন জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর সরকারি হাসপাতালে গিয়ে তিনি দেখেন অধিকাংশ রোগীদের আত্মীয়রাই ভীষণ গরীব। সারাদিনে এক কাপ চা ও রুটি খেয়েই কাটিয়ে দেন তারা। এটা দেখার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন তার সামর্থ অনুযায়ী প্রতিদিন কয়েকটি পরিবারকে অল্প দামে খাবার দিবেন।
যথারীতি তিনি ওই হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তার ও নার্সদের সঙ্গে দেখা করেন। তাদেরও বিষয়টা জানান। তাদের সহায়তায় তিনি এবং তার স্ত্রী মিলে টোকেন সিস্টেমে ১০ জনকে এই ১ টাকায় খাবার দেওয়া শুরু করেন। এখন সেই সংখ্যাটা ১০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭০। শুধু সকালেই নয়, বিকেলে ৪০ জনকে এবং রাতে ২০ জনকে এক টাকায় মিল দেওয়া হয়। বর্তমানে ৮ জন কাজ করেন ওই মেসে।
আগামী দিনে এই সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০ করতে চান ভেঙ্কট রামন। তার মেসে এমনিতে প্রতি মিলের দাম ৫০ টাকা। এরই পাশাপাশি এক টাকায় মিল দেয়ার উদ্যোগ চালাচ্ছেন তিনি। এর ফলে তার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।
দুই মেয়ের মা ভেঙ্কট রামনের স্ত্রী জানিয়েছেন, আর্থিক ক্ষতির কথা না ভেবেই এই প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এভাবেই এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন এবং একজনকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াচ্ছেন। এই সংখ্যাটা আরও বাড়ুক এমনটাই চান ওই দম্পতি। এভাবেই দরিদ্রদের পাশে থাকতে চান তারা।


SHARE THIS

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: