শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৫

ফরিদপুরে উভচর বোট অ্যান্ড কার;

ফরিদপুরে উভচর বোট অ্যান্ড কার;

অভাবে ৪ বছর পরেও আলোর মুখ দেখলোনা ফরিদপুরের হাবিবুর রহমান ইমরানের উভচর বোট অ্যান্ড কার; খবরটা জেনেছিলাম ২০১০ সালের ডিসম্বেররের দিকে, সংবাদের শিরোনাম ছিলো,”ফরিদপুরেরহাবিবুর রহমানের আবিস্কার উভয়চর গাড়ি”। তার গাড়ি আবিস্কারের প্রায় চার বছর অতিবাহিত হবার পরেও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বাংলাদেশের তরুন ও মেধাবী মানুষের অনেক গৌরবোজ্জল আবিস্কারের মতো এই উভয়চর গাড়িতে চড়ার শখও রেয়ে গেল স্বপ্ন হয়ে।ফরিদপুরের শিবরামপুর এলাকার দরিদ্র শেখ হাসমত আলীর পুত্র স্বল্প শিক্ষিত দরিদ্র হাবিবুর রহমান ইমরান বিগত ৮ বছর আগে এমন একটি গাড়ি তৈরি করেছেন যা একই সঙ্গে যেমনি চলতে পারবে স্থলে তেমনি চলবে পানিতেও। ইমরানের ইচ্ছা দেশের বেকার যুবকদের কাজে লাগানোর মাধ্যমে তাদের স্বাবলম্বী করা। দেশের অন্যতম সমস্যা বিদ্যুৎ ঘাটতির এ দেশে এক মিনিটের বেশি বিদ্যুৎ যাতে না যায় সে জন্য নতুন আবিষ্কারে মনোযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি। দরিদ্র ইমরানের এসব কাজে উৎসাহ দিচ্ছেন বিদ্যুৎ বিভাগের গাড়ি চালক আবুল কালাম মোল্লা।
শুধু গাড়ি আবিষ্কারই নয়, তিনি তৈরি করেছেন বিদ্যুৎ ছাড়া হস্তচালিত পাম্প, ডিম ফুটানো মেশিন ও রিমোট কন্ট্রোল বেবি কার। হাবিবুর রহমান ইমরানের ইচ্ছার গল্প যেন কল্পনাকেও হার মানিয়ে ছিলো। প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মেনেছিল দারিদ্র্য ও শিক্ষা। স্কুলের গণ্ডি না পেরোনো ইমরান বেশকিছু আবিষ্কার করে প্রকৌশলীদেরও যেন হার মানিয়েছেন। ৩৭ বছর বয়সী ইমরান ব্যবসা করতেন ফার্নিচারের। প্রায় ৭ বছর আগে অসুস্থতার কারণে ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। কাজ পাগল ইমরানের যখন সময় কাটতে চাইত না তখন তার মাথায় আজব সব বুদ্ধি খেলতে থাকে। প্রথমে তৈরি করেন ব্যাটারিচালিত বেবি কার। সে সময় আমেরিকার একটি কোম্পানি ব্র্যাকের সহযোগিতায় তার বেবি কার নিতে চায়।
প্রাথমিকভাবে ৩০টির অর্ডারও দেয়। কিন্তু টাকার অভাবে গাড়ি বানাতে পারেনি ইমরান। এরপর ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক তৈরি করেন। সেটিও রাস্তায় নামাতে পারেননি পুঁজির অভাবে। এরপর একে একে হস্তচালিত পাম্প ও বিদ্যুৎ ছাড়া ডিম ফুটানো মেশিন আবিষ্কার করেন। এ মেশিন থেকে প্রতিদিন শত শত মুরগির ডিম ফুটানো হচ্ছে। নিজের ছোট্ট বাড়িটিতে গড়ে তুলেছেন মুরগির ফার্ম। তখন ইমরান স্বপ্ন দেখেন একটি গাড়ি নির্মাণের। যে গাড়িটি চলবে রাস্তায় ও পানিতে। যে চিন্তা সেই কাজ। নেমে পড়লেন স্বপ্নের গাড়ি বানানোর চেষ্টায়। ১ বছরের পরিশ্রম ও ২ লাখ ১৮ হাজার টাকা খরচের পর ইমরান গাড়ি বানাতে সক্ষম হয়েছেন। নাম দিয়েছেন বোট অ্যান্ড কার।গাড়িটিতে ১৫ জন যাত্রী বসতে পারে। সামনের দিকটা বিমানের আদলে তৈরি। গাড়িটিতে রয়েছে টিভি-সিডি। শ্যালো মেশিনের ইঞ্জিন দিয়ে গাড়িটি বানানো হলেও আধুনিক ইঞ্জিন লাগাতে পারলে আরও যাত্রী বহন সম্ভব হবে। এ ছাড়াও গাড়িটিতে স্থাপন করা হয়েছে মাছ ধরার যন্ত্র। পানিতে চলার সময় অটোমেটিকভাবে মাছ তুলে আনতে পারবে। দৈব দূর্বিপাকে পানিতে চলার সময় গাড়িটি ঢেউয়ের কারণে তলিয়ে গেলে রিমোর্ট
কন্ট্রোলের সাহায্যে ১ মিনিটের মধ্যে শনাক্ত এবং টেনে তোলা যাবে।

দরিদ্র ও মেধাবি হাবিবুর রহমানের আসা ছিলো সরকারি কিংবা কোন প্রতিষ্ঠানের সাহায্য পেলে আরও আধুনিক মানের গাড়ি তৈরি করতে সক্ষম হবেন তিনি। ইমরানের গাড়িটি ২০১১সালে রাস্তায় নামবে বলে শোনা গেলেও যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে দু বছর পরেও আলোর মুখ দেখলোনা ফরিদপুরের হাবিবুর রহমান ইমরানের বোট অ্যান্ড কার। এভাবেই আমাদের প্রতিভাগুলো আস্তে আস্তে হারিয়ে যায় , আমরা কিছুই করতে পারিনা। আমরা তাদের প্রাপ্য সম্মান তো দিতেই পারিনা উল্টা তারা হাসির পাত্রে পরিণত হয় যা অন্যদের যারা হয়ত এগিয়ে আসত এমন কাজে তারাও অনুৎসাহিত হয়ে ভাবে কি হবে এসব করে??? আর কতকাল এভাবে অভাগা জাতি হয়ে থাকব আমরা যারা প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও পিছিয়ে আছে .।

ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের জীবন

ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের জীবন

সাগরে মানব পাচারকারীদের অত্যাচার সহ্য করে, দীর্ঘদিন অনাহারে, অর্ধাহারে থেকে, অবশেষে ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছেন তাঁরা৷ আচেহ রাজ্যে পৌঁছানো রোহিঙ্গা এবং দরিদ্র বাংলাদেশিদের জীবন কীভাবে কাটছে সেখানে? দেখুন ছবিঘরে...
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর তাদের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলেছে, মে মাসে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রায় পাঁচ হাজার নাগরিককে সাগরে ভাসমান জাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে৷

আত্মরক্ষায় গুলি ছোড়ার নির্দেশ সিএমপি কমিশনারের

আত্মরক্ষায় গুলি ছোড়ার নির্দেশ সিএমপি কমিশনারের

সিএমপি কমিশনার মোহা.আব্দুল জলিল মন্ডল.
সাভারের আশুলিয়ায় চেকপোস্টে পুলিশ হত্যার পর বন্দরনগরীতে মাঠে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের আরও সতর্কভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।  নগরীর বিভিন্ন চেকপোস্টে তল্লাশির ক্ষেত্রে এবং মাঠে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে সিএমপি কর্তৃপক্ষ।  

তল্লাশির ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং হেলমেট পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।  এছাড়া আক্রান্ত হলে আত্মরক্ষার্থে মাঠে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা গুলি ছুঁড়তে পারবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন সিএমপি’র শীর্ষ কর্মকর্তারা।

সিএমপি কমিশনার মোহা.আব্দুল জলিল মন্ডল বাংলানিউজকে বলেন, মাঠে দায়িত্ব পালনের জন্য যাবার আগে সাধারণত পুলিশ সদস্যদের এক ধরনের নির্দেশনা দিয়ে পাঠানো হয়।  কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন।  পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাদের আরও সচেতনভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

‘কোন ক্রিমিনাল যদি পুলিশের উপর আক্রমণ করে, পুলিশ সদস্যদের হত্যা করার চেষ্টা করে তবে আত্মরক্ষার্থে অবশ্যই পুলিশ গুলি ছুঁড়তে পারবে।  তাদের সেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ’ বলেন সিএমপি কমিশনার।

বুধবার (৪ নভেম্বর) সকালে সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের একটি চেকপোস্টে তল্লাশির সময় ছুরি মেরে শিল্প পুলিশের এক কনস্টেবলকে হত্যা ও চারজনকে জখম করে দুর্বৃত্তরা।  এর ১৩দিন আগে ২২ অক্টোবর ঢাকার গাবতলীতে চেকপোস্টে তল্লাশির সময় ইব্রাহিম মোল্লা নামে এক এএসআইকে একই কায়দায় খুন করে দুর্বৃত্তরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক এসব ঘটনার মধ্যেও বন্দরনগরীর মাঠে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের মনোবল যাতে অটুট থাকে সেজন্য বুধবার সকালে সিএমপি কমিশনার এবং অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য পৃথকভাবে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। 

এছাড়া এখন থেকে চেকপোস্টে তল্লাশির সময় ইউনিট চিফ হিসেবে অতিরিক্ত উপ কমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, যে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঠেকাতে নগরীতে চেকপোস্টের মাধ্যমে তল্লাশি কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে।  গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যেসব তল্লাশি চলছে সেটা পর্যায়ক্রমে আরও বাড়ানো হবে।  তবে এটি করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা কোন দুর্ঘটনার শিকার যেন না হয় সেজন্য তাদের প্রয়োজনীয় কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।  ‍আশুলিয়ায় পুলিশ হত্যার পর মাঠে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ইউনিট চিফের কাছে এসব নির্দেশনা পৌঁছানো হয়েছে।

‘নির্দেশনার মধ্যে আছে-প্রথমে যারা ডিউটি করতে যাবে, তাদের কার কী দায়িত্ব সেটা ইউনিট ইনচার্জ ব্রিফিং করে তার সদস্যদের জানিয়ে দেবে।  চেকপোস্টে যারা থাকবেন, তারা যেন পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে তল্লাশি করে।  বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট আর হেলমেট যেন অবশ্যই পড়ে।  অস্ত্র যার যেটা থাকা দরকার, সেটা যেন অবশ্যই থাকে।  এমন জায়গায় যেন তল্লাশি করা না হয় যেখানে অপরাধী দুর্ঘটনা ঘটানোর সুযোগ পায়। ’ বলেন দেবদাস। 

তবে চেকপোস্টে তল্লাশির ক্ষেত্রে কেউ যাতে অযথা হয়রানির শিকার না হন সেদিকে সতর্ক থাকার জন্যও মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সতর্ক করেছেন সিএমপি কমিশনার মোহা.আব্দুল জলিল মন্ডল। 

‘যারা ভদ্রভাবে পরিবার নিয়ে যাচ্ছে তাদের যেন হয়রানি করা না হয়।  কিন্তু যারা সন্ত্রাসী, যাদের সন্দেহ হবে তাদের যেন তল্লাশি করার আগে নিজের প্রস্তুতিটা ঠিক থাকে।  সেক্ষেত্রে অবশ্যই অবশ্যই যদি সে পুলিশকে গুলি করার চেষ্টা করে বা আহত-নিহত করার চেষ্টা করে, পুলিশ তার জীবন রক্ষার্থে গুলি করতে পারবে।  এটা আইনেই বলা আছে। ’ বলেন মন্ডল।

সিএমপি কমিশনার বলেন, বিএনপি-জামায়াত যখন আন্দোলন করছিল, পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে পুলিশের উপর হামলা হত।  কিন্তু পুলিশ সদস্যরা সেই অস্ত্র দিয়ে গুলি করতে তখন দ্বিধান্বিত ছিল।  কারণ গুলি করলে আবার জবাবদিহি করতে হয় কিনা।  কিন্তু এখন আমার সম্পদ এবং জীবনের উপর হামলা হচ্ছে।  এক্ষেত্রে সরকার আমাকে অস্ত্র দিয়েছে, গুলি দিয়েছে।  আইনেও কোন বাধা নেই।  জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য আমার নির্দেশনা থাকবে-আইনে যেটা বলা হচ্ছে সে যদি নিজে আক্রান্ত হয় তাহলে অবশ্যই অবশ্যই সে গুলি করতে পারবে। 

দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে গত ১৭ নভেম্বর থেকে নগরীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে নগর পুলিশ।  নগরীর কমপক্ষে অর্ধশতাধিক স্পটে সারপ্রাইজ চেকপোস্ট বসিয়ে প্রতিদিন চালানো হচ্ছে তল্লাশি।  এর মধ্যে বিমানবন্দরসহ স্পর্শকাতর স্থাপনায় হামলার তথ্য পেয়ে গত ২৫ অক্টোবর থেকে নগরীতে তল্লাশির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেয় পুলিশ।  বিমানবন্দরেও এপিবিএন এবং বিজিবি’র ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়েছে।  চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে।