বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

একদিনে ৩০ জন পুরুষ আমাকে ছিঁড়ে খেয়েছে

একদিনে ৩০ জন পুরুষ আমাকে ছিঁড়ে খেয়েছে

২৪ ঘণ্টায় ৩০ পুরুষের ধর্ষণ। সাতদিন এক নাগাড়ে, সঙ্গে মারধর! সেই ভয়াবহ দিনগুলো দুঃস্বপ্নের মতো। আজও তিনি শিউরে ওঠেন। কতই বা বয়স তখন। বছর ১৪, খুব বেশি হলে। স্কুল, বন্ধুদের সঙ্গে খেলা, বই পড়া, গান শোনা -- নিশ্চিন্ত, সুখের মেয়েবেলাই তো তাঁর প্রাপ্য ছিল। একদিন সব সব ওলটপালট হয়ে গেল। পাড়ার এক কাকুর হাত ধরে কাজের খোঁজে নেপাল থেকে ভারতের মুম্বাই।

তারপর মর্মান্তিক সেই ছবি। একটি ঘরে বন্দি। চিত্‍‌কার করেও কোনও লাভ নেই। একের পর এক লোক ঢুকে মিটিয়ে যাচ্ছে বিকৃত যৌন লালসা। ক্লান্ত, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন তিনি। সেই অন্ধকার জগত থেকে কোনও ক্রমে পালিয়ে বেঁচেছিলেন নেপালের সুনীতা দুয়াঁওয়ার। পাচার হওয়া নাবালিকাদের যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করাই এখন ব্রত সুনীতার।

ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত নেপালে এখনও হাহাকার। প্রকৃতির রোষে সব হারিয়ে প্রতিনিয়ত বাঁচার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে নেপালবাসী। আর তাঁদের এই দুরাবস্থার সুযোগ নিতে ব্যস্ত নারীপাচারকারীরা। কাজের প্রলোভন দেখিয়ে নাবালিকাদের ভারতে পাচার করে জোর করে যৌনপল্লিতে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা নেপালে নতুন নয়।

ভূমিকম্পের পর তা আরও বেড়েছে। নারীপাচারকারীদের বিরুদ্ধে একা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সুনীতা দুয়াঁওয়ার। যৌনপল্লির অন্ধকার থেকে নাবালিকাদের উদ্ধার করার লড়াই। হাজারো চোখরাঙানি, প্রাণে মারার হুমকি -- সব কিছু উপেক্ষা করেই তিনি লক্ষ্যে অবিচল।

সুনিতা জানাচ্ছেন, ২০ বছর আগে তাঁর সঙ্গেও ঘটেছিল সেই ভয়াবহ ঘটনা। বিস্ফোরক স্বীকারোক্তিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন দুনিয়ায়। জানাচ্ছেন, তাঁর যখন ১৪ বছর বয়স, তখন তাঁকে ভারতে কাজ দেওয়ার নাম করে নিয়ে যাওয়া হয়। সংসারের অভাব মেটাতে পাড়ার আঙ্কেলের সঙ্গে রাজি হয়ে যান তিনি। মুম্বাই গিয়ে সেই আঙ্কেল হঠাত্‍‌ বদলে গেল। একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ঘরে ঢুকিয়ে তালা দিয়ে চলে গেল। বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি বিক্রি হয়ে গিয়েছেন। এখন এই নরককুণ্ডই তাঁর ভবিতব্য। এরপর শুরু অত্যাচার।
সুনীতার কথায়, 'পাঁচ মাস আমি বন্দি ছিলাম। ঘরের বাইরে বেরোতে দেওয়া হত না। একের পর এক লোক ঢুকত। তারপর শুরু করত ধর্ষণ। এই ভাবেই কাটত গোটা সপ্তাহ। এমনও দিন গিয়েছে যে, একদিনে ৩০ জন পুরুষ আমাকে ছিঁড়ে খেয়েছে। বাধা দিলেই জুটেছে মার। জোর করে মুখে ঢুকিয়ে দেওয়া হত খাবার। এমনকি ঘুমিয়ে পড়লেও আমাকে মাঝরাতে তুলে বলা হত, কাস্টমার এসেছে। তোমার সঙ্গে সেক্স করতে চায়।'

পাঁচ মাস এই অত্যাচার সহ্য করার পর পালিয়ে যান সুনীতা। তারপর জীবনের ব্রত করেন, পাচার হওয়া নাবালিকাদের তিনি উদ্ধার করবেন। তাঁর মতো অবস্থা যেন কারও না হয়। সুনীতার কথায়, 'সারা বিশ্বে ২ লক্ষ ২৮ হাজার ৭০০ নেপালি নাবালিকা যৌনপল্লিতে আটক রয়েছে। জাতিসঙ্ঘের রিপোর্ট বলছে, প্রতিবছর কাজ দেওয়ার নাম করে ৭ হাজার নাবালিকাকে নেপাল থেকে পাচার করা হয়। এই কাজ আমি বন্ধ করবই।' 

যানজট-জলজট আতঙ্কে অনেকে বাসা থেকেই বের হননি।

যানজট-জলজট আতঙ্কে অনেকে বাসা থেকেই বের হননি।

যানজট-জলজট আতঙ্কে অনেকে বাসা থেকেই বের হননি। আর যে কারণে গতকালের রাজধানী ছিল অনেকটাই ফাঁকা। সকাল থেকে বৃষ্টি হলেও দুপুর নাগাদ তা থেমে যায়। কিন্তু মানুষ ভোগান্তির কথা চিন্তা করে অনেকেই বাসায় অলস সময় কাটান। এক দিনের জলাবদ্ধতা রাজধানীর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিটি সবজির কেজি গতকাল অন্তত ১০ টাকা বেশিতে কিনতে হয়। গতকালও কোনো কোনো এলাকার প্রধান সড়কে পানি আটকে ছিল। এ দিকে, রাজধানীর কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি জমে রয়েছে। বিশেষ করে রাজধানীর নি¤œাঞ্চলের বাসাবাড়ির নিচতলায় এখন হাঁটুপানি। ওই সব এলাকার বাসিন্দারা এখন মহা বিপাকে। 
গত মঙ্গলবার দিনভর বৃষ্টিতে অচল ছিল রাজধানী। সকালের বৃষ্টি উপেক্ষা করে যারা বের হয়েছিলেন কাজে তারা পড়েন মহা বিপাকে। কাজ তো হয়ই নি, উল্টো দিনভর কেউ কেউ যানবাহনে আটকে থেকেছেন, আর অনেকে কাকভেজা হয়ে ঘরে ফিরেছেন দুঃসহ ভোগান্তির পরে। পথেঘাটে অসংখ্য খানাখন্দক আর উন্নয়নের নামে সৃষ্ট বড় বড় গর্তে পড়ে অনেকে আহত হয়েছেন। অসংখ্য যানবাহন পানিতে আটকে অকেজো হয়েছে। আর এসব কারণে দিনভর ছিল ভয়াবহ যানজট।
পরশুর এই ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে অনেকেই গতকাল ঘর থেকে বের হননি। একেবারে যারা চাকরি-বাকরি করেন, বা খুবই জরুরি কাজের জন্য বাইরে বের হতে হবে তারা ছাড়া। গতকালও সকালে রাজধানীতে ছিল বৃষ্টি। দুপুর ১২টার দিকে বৃষ্টি থেমে যায়। এরপর বৃষ্টি না হলেও মানুষের মধ্যে ভয় ছিল পানির। গতকালও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাটে পানি লক্ষ করা গেছে। হাঁটু না ডুবলেও সেই পানিতে পা ভিজেছে। আর কোথাও কোথাও হাঁটুপানিও লক্ষ করা গেছে। ঝিগাতলা গাবতলা মসজিদ থেকে পা ভেজা পানি দেখা গেছে ঝিগাতলা মোড় পর্যন্ত। বউবাজারে গতকালও ছিল হাঁটুপানি। লালবাগের বিভিন্ন গলিতে গতকালও হাঁটুপানি লক্ষ করা যায়। পোস্তাগোলার করিমুল্লার বাগ, কদমতলী ও শ্যামপুরের বিভিন্ন এলাকা, গেন্ডারিয়ার বিভিন্ন রোডে গতকালও হাঁটুপানি লক্ষ করা যায়। প্রধান প্রধান সড়কে গতকালও পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। শান্তিনগর, নয়া পল্টনসহ বেশ কয়েকটি রাস্তায় গতকালও পানি জমে ছিল। তবে প্রধান সড়কগুলোর এই পানি মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করেনি। উল্টো কোনো কোনো এলাকায় গতকাল ছুটির আমেজ লক্ষ করা যায়। 
এ দিকে, জলাবদ্ধতার কারণে বেশির ভাগ রাস্তার অবস্থা একেবারে নাজুক হয়ে গেছে। এক দিন আগেও যেসব রাস্তা চলাচলের উপযোগী গতকাল তার অনেক রাস্তায় বড় বড় গর্ত লক্ষ করা যায়। পানিতে ডুবে থেকে রাস্তার ওপরের স্তর উঠে গেছে। এসব রাস্তা এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।
গতকালও রাজধানীর বেশির ভাগ ফুটপাথের দোকানপাট বন্ধ ছিল। রাস্তায় যানবাহন কম লক্ষ করা গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও উপস্থিতি ছিল কম। রাজধানীর মধুবাজারের বাসিন্দা নেওয়াজ বলেন, তিনি তার সন্তানকে নিয়ে গতকাল আর স্কুলে যাননি। আগের দিন ভোগান্তির কথা চিন্তা করেই গতকাল বাসা থেকে বের হননি। 
এ দিকে, এক দিনের বৃষ্টির ফলে রাজধানীর নি¤œাঞ্চল বিশেষ করে হাজারীবাগ, কামরাঙ্গিরচর, লালবাগ, শ্যামপুর, কদমতলী, যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, মুগদা, ডেমরা ও সবুজবাগের বেশ কিছু এলাকার বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি জমে ছিল। ওই সব এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এভাবে দু-চার দিন পানি জমে থাকলে তাদের মহা ভোগান্তি হবে। ইতোমধ্যে তাদের ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। রান্নাবান্নাও অনেকের বন্ধ। নিত্যপ্রয়োজনীয় পানি নিয়েও তারা সমস্যায় পড়েছেন। ওই সব এলাকার অনেক দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। 
মান্ডা এলাকার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঘর থেকে বের হতে এখন নৌকা লাগবে। মাতুয়াইলের বাসিন্দা নাজিম বলেন, নৌকায় করে এখন বাসা থেকে বের হতে হয়। এভাবে আরো কয়েক দিন জলাবদ্ধতা থাকলে মহা সমস্যায় পড়বেন তারা।



দীর্ঘ সময় পর সিলেটের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন চালু

দীর্ঘ সময় পর সিলেটের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন চালু

দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা পর সিলেটের সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে ট্রেন যোগাযোগ শুরু হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজারে চট্টগ্রামগামী একটি ট্রেনের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়।
শমসেরনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির হোসেন জানান, রাতে চট্টগ্রামগামী ১৪ নম্বর ডাউন জালালাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ওই সময় সিলেট থেকে ঢাকাগামী কালনি এক্সপ্রেস ও সিলেট থেকে আখাউড়াগামী ডেমু ট্রেন আটকা পড়ে।
বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট থেকে উদ্ধারকারী দল গিয়ে বগি দুটি উদ্ধার করে। এরপর সকাল আটটার দিকে ট্রেন চলাচল আবার শুরু হয় বলে জানান তিনি।
ছয় ঘণ্টা রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ওই রুটের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।