সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৫

রাজশাহীর মেয়ে কাঁপাচ্ছে রাশিয়া (ভিডিও)


বিশ্বগণমাধ্যম ফলাও করে প্রচার করেছে বাংলাদেশী বংশদ্ভুত রাশিয়ার রিদমিক জিমন্যাস্টিক কন্যার কথা। প্রতিবেদনে তাকে উল্লেখ করা হয়েছে ‘বাংলার বাঘিনী’নামে। আর এই খেতাব তাঁকে দিয়েছেন রুশ কোচ ইরিনা ভিনের। রাশিয়ার গণমাধ্যমেও রিতাকে ‘বাংলার বাঘিনী’ নামেই উল্লেখ করেছে। রিদমিক জিমন্যাস্টিকের ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিংয়ে তার অবস্থান বর্তমানে ২ নম্বরে! যা কিনা সত্যি গর্বের ও আনন্দের…
কে এই রিতা?
২০১৩ সালে রিতার এমন গৌরবোজ্জ্বল সাফল্যের কারণে তাকে নিয়ে হৈচৈ পড়ে যায় রাশিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে। রাশিয়ার বিখ্যাত ক্রীড়া ম্যাগাজিন ইউরো স্পোর্ট এর প্রচ্ছদে উঠে আসে রিতার সাফল্যের গল্প। তার বাবা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন রাজশাহীর ছেলে। ১৯৮৩ সালে শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে তিনি রাশিয়া যান। পরে সেখানেই স্থায়ী হয়ে যান। সবচেয়ে মজার তথ্য হল  পাঠক, বাংলাদেশী বংশদ্ভুত এই রিতাকে বিশ্ব গণমাধ্যম অন্য এক নামে চেনে,  সেখানে তার নাম‘মার্গারিতা মামুন’। ঠিক এই নামেই এই রিদমিক জিমন্যাস্টিকে চেনেন বিশ্ববাসী। রিতার রক্তে বইছে জিমন্যাস্টিকস, ১৯৯৫ সালের ১ নভেম্বর রাশিয়ার মস্কোতে জন্ম নেয়া  রিতার বাবা বাংলাদেশী বংশদ্ভুত আবদুল্লাহ আল মামুন প্রকৌশলী হলেও তার মা রাশিয়ান বংশদ্ভুত এ্যানা একজন পেশাদার রিদমিক জিমন্যাস্টিক ছিলেন। তাই ছোট বেলা থেকেই জিমন্যাস্টিকস চর্চা চালিয়ে গেছেন তিনি। ব্যাক্তিগত জীবনে এখনও বিয়ে করেননি মার্গারিতা মামুন রিতা। তার একটি ছোট ভাই আছে, নাম ফিলিপস। বর্তমানে তারা সপরিবারে রাশিয়ার মস্কোতে বসবাস করছেন।


২০১১ সাল থেকে রিতার খেলোয়াড়ী জীবনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসতে শুরু করে। ২০১১ সালে মন্ট্রিল ওয়ার্ল্ড কাপে অংশ নিয়ে ১০৬.৯২৫ পয়েন্ট অর্জন করে অল-অ্যারাউন্ডে ব্রোঞ্জ পান রিতা। আর বল ফাইনালে ২৭.০২৫ পয়েন্ট নিয়ে স্বর্ণ জিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ওই বছর রাশিয়ার চ্যাম্পিয়নশিপে হুপ ও বলে অল-অ্যারাউন্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় দলে ডাক পড়ে যায় তার। উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী রিতা রিদমিক জিমন্যাস্টিকসের ২০১৪ সালের ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশীপে সবমিলিয়ে সিলভার মেডেলিস্ট এবং ২০১৩ সালের ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনালে ‘অল অ্যারাউন্ড’ চ্যাম্পিয়ন।
এরপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি তার শুরু হয়ে যায় তার জয়যাত্রা। ২০১১ সালে তার ওয়াল্ড ৠাংকিং ছিল ২২, যা কিনা ২০১২ সালে হয়ে যায় ১৭। কিন্তু ২০১৩ সালে একলাফে ওয়াল্ড র্যা ঙ্কিংয়ের ১ নম্বরে চলে আসেন তিনি। মস্কো গ্রান্ড প্রিক্সে স্বর্ন জেতার মধ্য দিয়ে মৌসুম শুরু করেন। এরপর কাজান ইউনিভার্সিয়াড, সেন্ট পিটার্নবার্গ ওয়াল্ড কাপ ফাইনাল, ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ এবং ওয়াল্ড চ্যাম্পিয়নশীপের মতো বড় ক্রীড়া ইভেন্টগুলোতে রিতার তার যোগ্যতার পরিচয় দেয়। আর বর্তমানে তিনি আছেন ওয়াল্ড ৠংকিংয়ের ২ নম্বরে। রিতার এগিয়ে চলা শানিত ফলা ঠিক একই রকম আছে। চলতি বছর জার্মানির স্টুটগার্টে আয়োজিত একটি প্রতিযোগিতায় রিতা তিনটি স্বর্ণ পদক, একটি সিলভার এবং একটি ব্রোঞ্জ পদক জয় করেন । রিতা সম্পর্কে বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আহমেদুর রহমান বাবলু জানালের, ‘রিতাকে বাংলাদেশের হয়ে অংশ নিতে চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সকল দিক বিবেচনা করে তিনি রাশিয়ার হয়েই খেলছেন। আর এ ধরণের একজন বিশ্বমানের খেলোয়াড় যে ধরণের সুযোগ-সুবিধা দেয়া দরকার তা আমাদের পক্ষে আসলেই সম্ভব নয়। তবে খুব সম্প্রতি তার সাথে আমরা আর যোগাযোগ করেনি।’ প্রসঙ্গত, রাশিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে কোন বাংলাদেশী বংশদ্ভুত নাগরিকের এটাই বড় সাফল্য। তাই রিতার এই অর্জনে বাংলাদেশ কমিউনিটির মানুষ খুবই খুশী। এমনকি ফেইসবুকে ও ইন্সটাগ্রামে তারা রিতার প্রতিযোগিতার ছবি প্রকাশ করেছে।

SHARE THIS

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: