রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৫

রাজশাহীতে শিয়ালের কামড়ে অর্ধশত ব্যক্তি আহত

রাজশাহীর বাগমারার নরদাশ ইউনিয়নের পূর্ব দৌলতপুর গ্রামে শিয়ালের কামড়ে অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে গ্রামটিতে শিয়াল আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শিয়াল তাড়াতে তিন গ্রামের লোকজন একজোট হয়েছেন। আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে গ্রামবাসী লাঠি সোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে ১২টি শিয়াল মেরে ফেলেছে।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, গতকাল শনিবার রাতে পূর্বদৌলতপুর গ্রামের সিয়ারুল ইসলাম (৩০) নামের এক ব্যক্তি মসজিদে ঈশার নামাজ পড়তে গিয়ে প্রথম শিয়ালের আক্রমণের শিকার হন। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে কামড়িয়ে রক্তাক্ত করে। তার চিৎকারে লোকজন ছুটে আসলে শিয়ালগুলো এলোপাতারিভাবে কামড়াতে থাকে। একই সময়ে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৪০-৫০ ব্যক্তিকে কামড়িয়ে আহত করে শিয়ালগুলো। এদের মধ্যে আহত সিয়ারুল ইসলাম নামের একটি ব্যক্তিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ভবানীগঞ্জ ক্লিনিকের পরিচালক ডাক্তার আবদুল বারী জানান, তিনি শিয়ালে কামড়ানো চার-পাঁচজন রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও বেশ কয়েকজনকে ভ্যাকসিন দিয়েছেন।
শিয়ালের আক্রমণে আহত ওই গ্রামের আফাজ উদ্দিন, রেহেনা বেগম, সায়লেন, মকবুল হোসেন জানান, বন্যার পানি বাড়তে থাকায় গত শুক্রবার রাতে কমপক্ষে অর্ধশত শিয়াল ফকিন্নী নদীর পাশে এসে ভিড় জমায়। শিয়ালগুলো পূর্বদৌলতপুর গ্রামের বিভিন্ন জঙ্গল ও ধানক্ষেতে আশ্রয় নেয়। এর পর তারা লোকালয়ে ঢুকে পড়ে লোকজনের ওপর আক্রমণ শুরু করে। তবে দিনে তাদের তৎপরতা না থাকলেও সন্ধ্যার পর তারা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। তারা ভয়ে লাঠি ও ধারাল অস্ত্র নিয়ে দলবেঁধে চলাফেরা করছেন। তারা আরো জানান, এই ঘটনার পর গ্রামের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তারা লাঠি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে চলাফেলা শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে গ্রামের লোকজন ১২টি শিয়াল পিটিয়ে ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে মেরে ফেলেছেন।  শনিবার রাতেই পূর্বদৌলতপুর, গোড়সার ও হুলিখালী গ্রামের লোকজন সভা করে শিয়াল তাড়ানোর জন্য একজোট হয়েছেন। তারা এলাকার জঙ্গল ও ঝোপ ঝাড়ে অভিযান চালিয়ে শিয়াল তাড়ানোর জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ রবিবার সকালে তারা এলাকার কয়েকটি ঝোপঝাড় পরিস্কার করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র পণ্ডিত জানান, শিয়ালগুলোর মধ্যে যেগুলো এডিস ভাইরাসে আক্রান্ত, সেগুলো কামড়ালে তা থেকে রোগ ছড়াতে পারে। এজন্য আক্রান্ত লোকজনকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। শিয়ালগুলোকে তো আর ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না। এজন্য সর্তক থাকতে ও সেগুলো নিধন করাই ভালো হবে। তবে মেরে না ফেলে তাড়িয়ে দিয়ে বা সর্তক থাকাই উত্তম। 

SHARE THIS

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: