নদীর তীরে অসংখ্য মাছ ভেসে ওঠেছে। তা দেখতে ভিড় করে উৎসুক জনতা। সবাই ব্যাপক আগ্রহ আর বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকে নদীর দিকে, এমন দৃশ্য তারা আগে কখোনো দেখেনি! হ্যাঁ, গত বৃহস্পতিবার চীনের তিয়ানজিনের হাইহি নদীতে এমনই ঘটনা ঘটে। নদীর তীর ঘেঁষে ভেসে উঠে হাজার হাজার মরা মাছ। এক সপ্তাহ আগে চীনের এ শহরটিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণস্থলের কাছ থেকে কয়েক মাইল দূরে এ মৃত মাছগুলো দেখা গেল।
জানা গেছে, ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনাটির ফলে পাশের নদীতে ছড়িয়ে পড়া বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে দেশটিতে গুরুতর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণস্থলের ওই গুদামটিতে অন্তত ২৫ হাজার টন বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থ মজুদ ছিল বলে জানা গেছে। তবে মাছের মৃত্যুর সাথে ওই বিস্ফোরণের সম্পর্ক আছে বলে মনে করছেন না চীনা কর্মকর্তারা। তারা সেখানে দূষণমুক্ত করার জন্য এখনো কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের এ ঘটনার কারণ জানতে চাওয়া ও তদের সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ দাবি করার পরিপ্রেক্ষিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এই দুর্যোগের যথাযথ তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার তিনি পলিটব্যুরো মিটিংয়ে বলেন, এ ঘটনায় বিপুল প্রাণহানি ও সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এটি রক্ত দিয়ে কেনা এক গভীর শিক্ষা।
সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বিস্ফোরণের এক সপ্তাহ পরেও অঞ্চলটিকে দূষণমুক্ত করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে গার্ডিয়ানের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে। বিস্ফোরণস্থানটির কাছের পানিতে নিরাপত্তার মাত্রার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি সোডিয়াম সায়ানাইড পাওয়া যাচ্ছে। সোডিয়াম সায়ানাইড মানুষের জন্য খুবই বিষাক্ত, এমনকি তা সামান্য পরিমাণে হলেও।
তবে চীনা কর্তৃপক্ষ জোর দিয়ে বলছে, নদীর যে স্থানে বৃহস্পতিবার হাজার হাজার মৃত মাছ পাওয়া গেছে সেখানকার পানির নমুনা পরীক্ষা করে বিপজ্জনক মাত্রার সায়ানাইড পাওয়া যায়নি। বিস্ফোরণস্থানটির কাছ থেকে এ জায়গাটির দূরত্ব চার মাইল।
তিয়ানজিংয়ের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এ মাছ মারা যাওয়ার ঘটনার তদন্ত করবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান ডেং জিয়াওয়েন। তবে পানি খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণে গ্রীষ্মকালে স্থানীয় নদীতে ব্যাপকহারে মাছ মারা যাওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয় বলেও তিনি জানান।
0 comments: