
শুধু গাড়ি আবিষ্কারই নয়, তিনি তৈরি করেছেন বিদ্যুৎ ছাড়া হস্তচালিত পাম্প, ডিম ফুটানো মেশিন ও রিমোট কন্ট্রোল বেবি কার। হাবিবুর রহমান ইমরানের ইচ্ছার গল্প যেন কল্পনাকেও হার মানিয়ে ছিলো। প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মেনেছিল দারিদ্র্য ও শিক্ষা। স্কুলের গণ্ডি না পেরোনো ইমরান বেশকিছু আবিষ্কার করে প্রকৌশলীদেরও যেন হার মানিয়েছেন। ৩৭ বছর বয়সী ইমরান ব্যবসা করতেন ফার্নিচারের। প্রায় ৭ বছর আগে অসুস্থতার কারণে ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। কাজ পাগল ইমরানের যখন সময় কাটতে চাইত না তখন তার মাথায় আজব সব বুদ্ধি খেলতে থাকে। প্রথমে তৈরি করেন ব্যাটারিচালিত বেবি কার। সে সময় আমেরিকার একটি কোম্পানি ব্র্যাকের সহযোগিতায় তার বেবি কার নিতে চায়।
প্রাথমিকভাবে ৩০টির অর্ডারও দেয়। কিন্তু টাকার অভাবে গাড়ি বানাতে পারেনি ইমরান। এরপর ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক তৈরি করেন। সেটিও রাস্তায় নামাতে পারেননি পুঁজির অভাবে। এরপর একে একে হস্তচালিত পাম্প ও বিদ্যুৎ ছাড়া ডিম ফুটানো মেশিন আবিষ্কার করেন। এ মেশিন থেকে প্রতিদিন শত শত মুরগির ডিম ফুটানো হচ্ছে। নিজের ছোট্ট বাড়িটিতে গড়ে তুলেছেন মুরগির ফার্ম। তখন ইমরান স্বপ্ন দেখেন একটি গাড়ি নির্মাণের। যে গাড়িটি চলবে রাস্তায় ও পানিতে। যে চিন্তা সেই কাজ। নেমে পড়লেন স্বপ্নের গাড়ি বানানোর চেষ্টায়। ১ বছরের পরিশ্রম ও ২ লাখ ১৮ হাজার টাকা খরচের পর ইমরান গাড়ি বানাতে সক্ষম হয়েছেন। নাম দিয়েছেন বোট অ্যান্ড কার।গাড়িটিতে ১৫ জন যাত্রী বসতে পারে। সামনের দিকটা বিমানের আদলে তৈরি। গাড়িটিতে রয়েছে টিভি-সিডি। শ্যালো মেশিনের ইঞ্জিন দিয়ে গাড়িটি বানানো হলেও আধুনিক ইঞ্জিন লাগাতে পারলে আরও যাত্রী বহন সম্ভব হবে। এ ছাড়াও গাড়িটিতে স্থাপন করা হয়েছে মাছ ধরার যন্ত্র। পানিতে চলার সময় অটোমেটিকভাবে মাছ তুলে আনতে পারবে। দৈব দূর্বিপাকে পানিতে চলার সময় গাড়িটি ঢেউয়ের কারণে তলিয়ে গেলে রিমোর্ট
কন্ট্রোলের সাহায্যে ১ মিনিটের মধ্যে শনাক্ত এবং টেনে তোলা যাবে।
দরিদ্র ও মেধাবি হাবিবুর রহমানের আসা ছিলো সরকারি কিংবা কোন প্রতিষ্ঠানের সাহায্য পেলে আরও আধুনিক মানের গাড়ি তৈরি করতে সক্ষম হবেন তিনি। ইমরানের গাড়িটি ২০১১সালে রাস্তায় নামবে বলে শোনা গেলেও যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে দু বছর পরেও আলোর মুখ দেখলোনা ফরিদপুরের হাবিবুর রহমান ইমরানের বোট অ্যান্ড কার। এভাবেই আমাদের প্রতিভাগুলো আস্তে আস্তে হারিয়ে যায় , আমরা কিছুই করতে পারিনা। আমরা তাদের প্রাপ্য সম্মান তো দিতেই পারিনা উল্টা তারা হাসির পাত্রে পরিণত হয় যা অন্যদের যারা হয়ত এগিয়ে আসত এমন কাজে তারাও অনুৎসাহিত হয়ে ভাবে কি হবে এসব করে??? আর কতকাল এভাবে অভাগা জাতি হয়ে থাকব আমরা যারা প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও পিছিয়ে আছে .।
0 comments: