বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৫

দাফনের একদিন পর লাশের আর্তনাদ । দেশে তোলপাড় । ভিডিও

হন্ডুরাসের এক অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী নেইসি পেরেজে তিন মাসের সন্তানসহ গত সোমবার রাতে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে ‘মৃত্যু’ হয়েছিল। অন্তত নেইসির পরিবারকে চিকিৎসক তাই জানিয়েছিলেন। হাসপাতাল থেকেও যথারীতি দেওয়া হয়েছিল ‘মৃত্যুসনদ’।


কিন্তু দাফনের ২১ ঘণ্টা পর কংক্রিটের তৈরি কবরের ভেতর থেকে শোনা যেতে লাগল আর্তনাদ। নেইসির স্বামী রুডি গঞ্জালেস সংবাদমাধ্যমকে জানান, দাফনের সময় তাঁর স্ত্রীকে বিয়ের পোশাকেই কবর দেওয়া হয়েছিল। স্ত্রীকে অকালে হারানোর শোকে কাতর রুডি দাফনের একদিন পর কবরের কাছে যান। আর তখনই তিনি কবরের ভেতর থেকে স্ত্রীর আর্তনাদ শুনতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আত্মীয়দের ডেকে পাঠান।

রুডি গঞ্জালেস বলেন, ‘কবরস্থানের নিরাপত্তারক্ষী জেসাস ভিলেনোভা আমাকে জানান, তিনি রাতে আর্তনাদ শুনতে পেয়েছেন। কিন্তু জেসাস কল্পনাও করতে পারেননি যে কবরের ভেতর থেকে কেউ আর্তনাদ করছিল।’

নেইসির মা এলা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোকে জানান, তীক্ষ্ণ শব্দে কবরের ভেতর থেকে কাঁদছিল নেইসি। সাহায্যের জন্য আর্তনাদও করেছিল। প্রথমে সবাই একে ‘প্রেতাত্মার কারসাজি’ বলে উড়িয়ে দিলেও শেষে কিশোরীর আর্তনাদে আত্মীয়রা কংক্রিটের তৈরি কবরটি ভাঙতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। কফিন ভেঙে দেখা গেল, নেইসির কফিনের কাচ ভাঙা আর তাঁর হাতের আঙুল থেকে রক্ত ঝরছে, অর্থাৎ বাঁচার তাগিদে খালি হাতেই কফিন ভেঙে ফেলেছিল কিশোরীটি । কিন্তু এত কিছু করেও বাঁচতে পারলেন না নেইসি। মরেই তাঁকে প্রমাণ করতে হলো, তিনি বেঁচে ছিলেন। কফিন থেকে বের করে আনার কিছুক্ষণের মধ্যে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে হন্ডুরাসের ১৬ বছর বয়সী কিশোরী।

এদিকে, সারা বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে হন্ডুরাসের এ ঘটনা। দেশটির একটি টেলিভিশনে ঘটনাটি দেখানোর পর অবাক করা ঘটনাটির ব্যাপারে জানতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। এরই মধ্যে টেলিভিশনে দেখানো ওই ভিডিওটি ইউটিউবে দেখেছেন নয় কোটি আটাত্তর লাখের বেশি মানুষ।
ভিডিওতে দেখা যায়, কংক্রিটের কফিন ভেঙে নেইসিকে বের করে আনছেন স্বজনরা। ভিডিওতে নেইসির কোনো নড়াচড়া বোঝা যায়নি। তবে কিশোরীকে কফিন থেকে বের করে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। এর পর আবার তাঁকে একই কবরে দাফন করা হয়।
এদিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সোমবার রাতে জ্ঞান হারানোর
ফলে হয়তো নেইসি পেরেজের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আর এতেই হয়তো চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন। অথবা এমনও হতে পারে, তাঁর হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়নি। কিন্তু আতঙ্কের ফলে পুরো দেহের মাংসপেশি অবশ হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে হয়তো তার পূর্ণ জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও মাংসপেশি অবশ হয়ে পড়ায় চিকিৎসকরা তাঁর হৃদস্পন্দন ধরতে পারেননি। দাফনের একদিন পর কবরের ভেতরে জ্ঞান পুরোপুরি ফিরে আসার পর অক্সিজেনের অভাবেই মৃত্যু হয় তাঁর।


মৃত কিশোরী নেইসির মা অভিযোগ করেন, প্রথমবার চিকিৎসকরা বেশি তাড়াহুড়ো করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন।

SHARE THIS

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: