বাসে, ট্রামে, ট্রেনে বা মেট্রোয় চড়তে আপনার সবচেয়ে বড় অস্বস্তির কারণটা যে কারও পেশা সেটা জানেন কি! ধরুন আপনি বাসে দাঁড়িয়ে আছেন, হঠাত্ই আপনার পাশ দাঁড়িয়ে থাকা লম্বা লোকটা হাত তুলল। তারপর! বিশ্রী গন্ধে আপনার গা গুলিয়ে এল। বগলের গন্ধে জ্ঞান হারানোটা হলিউডের কমেডি সিনেমায় নয়, বাস্তবেও শোনা যায়। কিন্তু এই বগলের গন্ধ শুঁকে কোনও বেশ কিছু মানুষ দারুণ উপার্জন করে বড়লোক হচ্ছেন সে খবর রাখেন কি? সম্প্রতি এক ম্যাগাজিনের খবর অনুযায়ী অদ্ভুত পেশা বা চাকরিতে যুক্ত মানুষদের রোজগারের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে সবার ওপরে আছেন ডিওডোরেন্ট টেস্টার বা সুগন্ধী পরীক্ষক। একজন অভিজ্ঞ পারফিউম বা ডিওডোরেন্ট টেস্টারের মাসিক মাইনে যে কোনও কর্পোরেট অফিসে কাজ করা উচ্চ পদস্থ কর্মীদের থেকে বেশি হয়।
একজন পারফিউম বা ডিওডোরেন্ট টেস্টারের কাজটা ঠিক কী? তাদের কাজ হল প্রতিদিন বিভিন্ন মানুশের গায়ে লাগানো সেন্ট বা ডিওডোরেন্টের গন্ধ শোঁকা। এই পেশার মানুষদের দিনের পুরো সময়টা অন্যের শরীরের ডিওডোরেন্টের গন্ধ পরীক্ষা করতে হয়। কোন ফ্লেভারটি আমার,
আপনার জন্য ভালো হবে এটা তারাই বাছাই করেন। ডিওডোরেন্টের গন্ধ সবচেয়ে বেশি বোঝা যায় বগল আর গলায়। তাই এই বিষয়ে পেশাদার পরীক্ষককে মূলত বগলের গন্ধই বেশি শুঁকতে হয়। একবার পরীক্ষককে শুঁকতে হয় বগলের দুর্গন্ধ থাকা অবস্থায়, তারপর তাঁকে শুঁকতে হয় সেন্ট না দিয়ে সাধারণ গন্ধ, একেবারে শেষে সেন্ট লাগানোর পর সুগন্ধে ভরা বগলের গন্ধ। এরপরই পরীক্ষক কোম্পানিকে রিপোর্টে লেখেন সেই বিশেষ সেন্ট বা ডিওডোরেন্টের পারফরম্যান্স, ভাল দিক- খারাপ দিক, বাজারে কতটা চলবে, সেই সব বিষয়ে।
পৃথিবীতে অদ্ভুত পেশায় যুক্ত হয়ে বহু মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন। পেশাগুলো অদ্ভুত কারণ এসব কাজগুলো যে কারও পেশা হতে পারে, সে খবরই আমরা রাখি না। এই যেমন- ওয়াইন টেস্টর, সেক্স টয় টেস্টার, ওয়াটার স্লাইড টেস্টার, পোষা জীব-জন্তুর খাবার পরীক্ষক, প্রোফেশনাল পুশার, বমি পরিষ্কারের চাকরি। পেটের দায়ে কত কিছুই না করতে হয়! কিন্তু এইসব পেশাদর সঙ্গে যুক্ত মানুষরা বলেন, তারা এসব কাজকে মনের আনন্দেই করেন।
0 comments: