আজ ১০ ডিসেম্বর, বিশ্ব মানবাধিকার দিবস, ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রটি গৃহীত হয়েছিল। দিবসটি সব জাতির, সব মানুষের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ মানদণ্ডের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় বলে পশ্চিমাদের দাবি। আমরা যারা তৃতীয় বিশ্বের খেটে খাওয়া দিনমজুর শ্রেণীর দেশে বাস করি তাদের কাছে এই বিশ্ব মানবাধিকারের সঙ্গায়ন যেটা পশ্চিমাদের করা এবং এর যথাযথ বাস্তবায়ন এক দৃষ্টিতে দেখতে পারিনা কিংবা সেটা দেখাও উচিত নয় আমাদের জন্য। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ” আমাদের স্বাধীনতা- আমাদের অধিকার চিরন্তন”। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা অর্থাৎ সারা বিশ্বের প্রতিটি নাগরিক কি আজ স্বাধীন? দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের যে অধিকারের কথা বলা হচ্ছে সেটা কি চিরন্তন হয়েছে নাকি আরো আটকে গেছে?বর্তমান বিশ্বে মানবাধিকারের চিত্র যদি আমরা একটু দেখি তাহলে বুঝতে পারি আসলে মানবাধিকারের ব্যবসায়ীরা বিগত সাতষট্টি বছর ধরেই কেমন যেন মানবাধিকারের নামে একধরনের ছলনা করে চলেছেন।মানবাধিকার বলতে আমরা বুঝি মানবের অধিকার যেখানে ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সবার মানবীয় অধিকার নিশ্চিত হবে এবং যে অধিকার বাস্তবায়নে বিশ্বসম্প্রদায় একযোগে কাজ করবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সে আশা আমাদের পূরণ হয়নি। বর্তমান বিশ্বে আজকে যারা মানবাধিকারের ঢোল পেটান সুযোগ পেলেই তারাই আবার কুৎসিতভাবে মানবাধিকারের গলা টিপে ধরেন।আজকের সিরিয়ায় লাখ, লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে ,হাজারো মানুষ সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন এখনও দিচ্ছেন এর জন্য কারা দায়ী ? যারাই আজ মানবাধিকারের ঢোল পেটাচ্ছেন তারাই এর জন্য দায়ী, আই এস সৃষ্টি যারা করেছেন ঠিক তারাই তালেবান সৃষ্টি করেছিলেন এভাবেই তারা মধ্যপ্রাচ্যকে আজীবনের জন্য অস্থির করে রেখেছেন উদ্দেশ্য একটাই সেখানে ইহুদি রাষ্ট্র নামের যে ক্যান্সারটি আছে, সেটা আরো বড় করা। অদূর ভবিষ্যতে হয়ত সেটা হয়েও যাবে।সুতরাং মানবাধিকার দিবস যদি শুধু পালনের জন্যই এসে থাকে, সেখানে যদি প্রকৃত মানবাধিকার বাস্তবায়নের তাড়া যদি কারো ভিতরে না থেকে থাকে এবং তাতে যদি কারো কিছু করার না থাকে তাহলে আমাদের কিছু বলার নেই। বর্তমান বিশ্বে নাকি ইউরোপিয়ানদের চেয়ে বেশি মানবতাবাদী আর কোন জাতি নেই, তারা রক্ত দেখলে ভয় পায় তাই ইউরোপিয় ইউনিয়নভুক্ত ২৮টি দেশ একসাথে এই অঞ্চলে আগামীতে মুসলমানদের পবিত্র ঈদুল আযহার দিনে গরু জবেহ করা নিষিদ্ধ করতে চাইছে , একসাথে হাজারো গরু জবাই করলে প্রচুর রক্তপাত ঘটে তাতে মানুষ ভয় পায় সুতরাং এই রক্তারক্তি বন্ধ করতে হবে। অথচ অত্যন্ত দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ্য করেছি বিগত শতাব্দীতে কিংবা শতাব্দীতে মার্কিন আগ্রাসনে ইরাক,আফগানে, সিরিয়া কিংবা লিবিয়ায় যত মানুষ মরেছে যত একপেশে যুদ্ধ হয়েছে তার সবখানেই ইউরোপিয়ানদের প্রচ্ছন্ন মদদ ছিলো তারা এসব যুদ্ধের মোট ব্যয়ের প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ বহন করেছে । তাহলে কি আজ এটিই প্রমাণিত যে ইউরোপিয়ানদের কিংবা পশ্চিমাদের নিকট মানুষের রক্তের চেয়ে গরুর রক্তের মূল্য অনেক, অনেক বেশি। অতএব মানবাধিকার নিয়ে আজ শুধু নিজের মত করে চিল্লালেই হবেনা,পশ্চিমা বিশ্বকে বিশ্ববাসীর সবার সমান অধিকার দিয়ে তারপর মারবাধিকারের জয়গান গাইতে হবে,তাহলেই মানবাধিকারের প্রকৃত জয়গান গাওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫
Author: সময়ের তাজা কাহিনী
Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.
0 comments: