মুখপোড়া হনুমান এখন স্থানীয় এলাকাবাসির কাছে এক আতংকের নাম । বেশ কিছুদিন ধরে খাবারের অভাবে চরম দুর্দশায় পড়েছে যশোরের কেশবপুরে বসতি গড়া তিন শতাধিকের বেশি হনুমান। খাবারের খোঁজে মরিয়া হয়ে মুখপোড়া হনুমানের পাল হানা দিচ্ছে স্থানীয়দের বসতবাড়ি ও ফসলের ক্ষেত , দোকান পাট, এমনকি স্থানীয় অফিসগুলোতেই। এমন আকস্মিক ঘটয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে আতঙ্কে দিনযাপন করছেন কেশবপুর ও মনিরামপুরের অন্তত ১০টি গ্রামের বাসিন্দারা।
কেশবপুর গ্রামের প্রবীন সাহেব আলী জানান , কেশবপুর পৌর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া হরিহর নদীর তীরে এক যুগ আগে মুখপোড়া হনুমানের অভয়ারণ্য গড়ে ওঠে। সরকার এই অভয়ারণ্যের হনুমানের জন্য খাবারও বরাদ্দ করে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য। তাই খাবারের সন্ধানে কেশবপুরসহ পাশ্ববর্তী মনিরামপুর উপজেলার বেশ কিছু গ্রামের ফসলের ক্ষেতে দল বেঁধে হানা দিচ্ছে এই হনুমানের দল । এর ফলে কৃষকরা তাদের ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না। অনেকে ফসল বাঁচাতে রাত জেগে পাহাড়া বসিয়েছেন। তাতেও প্রতিকার মেলেনি। ক্ষেত থেকে ধাওয়া খেয়ে হনুমান এখন হানা দিচ্ছে গ্রামের মানুষজনের ঘরবাড়িতে। কোথাও কোথাও দলবদ্ধ হনুমানের হামলার শিকারও হচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের ।
মনিরামপুরের মুজগুল্লি গ্রামের যুবক রফিক সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, একই গ্রামের তার আত্মিয় কৃষক আবুল কাশেম মিয়া প্রায় চার লাখ টাকা খরচ করে পাঁচ বিঘা জমিতে আম ও বরই চাষ করেছিলেন তিনি। কিন্তু হনুমানের পাল তার পুরোটাই সাবাড় করে দিয়েছে।
এমন অসংখ্য অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ফারুক হোসেন জানালেন , এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
অন্যদিকে, কেশবপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা হাবিবুজ্জামান জানান, তিন শতাধিক হনুমানের জন্য প্রতিদিন সরকারিভাবে বরাদ্দ ২০ কেজি পাকা কলা, তিন কেজি বাদাম ও দুই কেজি পাউরুটি, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তবে খাদ্য সমস্যা দূর করা গেলে হনুমানের অত্যাচার থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করা যাবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে শিগগিরই আলোচনা করা হবে।
0 comments: