সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

২ কোটি ৭১ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ রুপি উদ্ধার ।

দুবাই থেকে আসা কনটেইনারভর্তি ভারতীয় মুদ্রা জব্দের ঘটনাটি আন্তর্জাতিক চোরাচালন চক্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর ও তদন্ত বিভাগের মহাপরিচালক ড. মঈনুল ইসলাম খান। তবে গোয়েন্দাদের তৎপরতায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
মূলত দুবাই হয়ে শ্রীলংকার কলম্বো সমুদ্র বন্দর হয়ে চট্টগ্রামে আসা এই চালানটির গন্তব্য বাংলাদেশ নয়, ভারতই হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা। 
জব্দ করা কনটেইনার থেকে উদ্ধারকৃত রুপি গণনা করে দেখা গেছে ২ কোটি ৭১ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ রুপি। তবে এসব রুপি জাল না আসল তা সনাক্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মেশিন আনা হয়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় আসল রুপির যে ২৯ টি চিহ্ন থাকে তার মধ্যে সব কটি নোটে ২৭টি চিহ্ন সঠিক থাকলেও ২টি মিলছে না। 
সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সামনে এ তথ্য তুলে ধরেন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের প্রধান এ কর্মকর্তা।
তিনি জানান, দুবাইয়ের জাবেল আলী পোর্ট থেকে ১২ সেপ্টেম্বর চালানটি শিপমেন্ট হয়ে ট্রানজিটের জন্য কলম্বো বন্দর পৌঁছে। সেখান থেকে চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে ১৬ সেপ্টেম্বর। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চালানের একটি কন্টেইনার আটক করা হয়েছে। কন্টেইনারের ৪টি কার্টনে ভারতীয় মুদ্রা পাওয়া গেছে। কন্টেইনার করে ভারতীয় মুদ্রা আনা হয়েছে। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক চক্র জড়িত আছে বলে মনে করছি। চালানটি দুবাই থেকে বাংলাদেশে এসেছে। এটা বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশে যেত। সুতরাং এর সঙ্গে একাধিক চক্র জড়িত আছে। জড়িত চক্রগুলোকে তদন্তের মাধ্যমে তুলে আনার চেষ্টা করা হবে।
গোয়েন্দা একটি সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় রুপিগুলো দুবাই থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ভারতেই চলে যেতো।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, এ ঘটনায় চালানটি খালাসে নিয়োজিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ফ্লাশ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান মো. শামীমুর রহমানসহ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসা শেষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ড.মঈনুল ইসলাম খান আরো বলেন,  মুদ্রাগুলো বৈধ কাজে ব্যবহারের জন্য আসেনি। এমনিতে জাল নোট নিষিদ্ধ। আর এভাবে মুদ্রা আনারও নিয়ম নেই। জড়িত চক্রটি এভাবে মুদ্রা আনা-নেয়ার পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিল। কন্টেইনারগুলোতে মুদ্রা ছাড়াও আরও কিছু থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বন্দরের ৮ নম্বর ইয়ার্ডে দুবাই থেকে আসা একই মালিকের চারটি কনটেইনারের মধ্যে একটি কনটেইনার জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এরপর রাতে কনটেইনার থাকা ১৬৫টি কার্টনের মধ্যে একটি কার্টন খোলা হয়। সেটিতে ভারতীয় মুদ্রা পাওয়া যায়। পরে দুপুরে সংশ্লিষ্ট সকলের উপস্থিতিতে কনটেইনারে থাকা চারটি কার্টন খুললে সেখানে ভারতীয় মুদ্রা পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, সবগুলো কার্টন ও অন্য তিনটি কনটেইনারেই ভারতীয় মুদ্রা পাওয়া যাবে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর দুবাই থেকে কলম্বো বন্দর হয়ে একটি চালানে চারটি কন্টেইনার আসে চট্টগ্রাম বন্দরে। মনরুভিয়ার পতাকাবাহী ‘প্রোসপা’ নামের একটি জাহাজে করে এই চালানটি আসে। দুবাই থেকে হাটহাজারীর বাসিন্দা শাহেদুজ্জামান সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ফ্লাশ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে চালনটি চট্টগ্রামে পাঠান। 


SHARE THIS

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: